Homeনারায়ণগঞ্জতোলারাম কলেজের ছাত্র-ছাত্রী সংসদ দখলে নিলো ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র নেতৃবৃন্দ

তোলারাম কলেজের ছাত্র-ছাত্রী সংসদ দখলে নিলো ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র নেতৃবৃন্দ

নারায়ণগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী সরকারি তোলারাম কলেজের ছাত্র-ছাত্রী সংসদ দখলে নিলো ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র নেতৃবৃন্দ। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) বেলা ১২টায় কলেজ প্রাঙ্গণে ঢুকে ছাত্র-ছাত্রী সংসদের তালা ভেঙ্গে তারা প্রবেশ করেন। এ সময় সাবেক এমপি শামীম ওসমান ও শেখ হাসিনার পোস্টার কলেজ মাঠ প্রাঙ্গনে পুড়িয়ে দেয়।

সরেজমিন দেখা যায়, তোলারাম কলেজের ভেতরে প্রবেশ করে তালা ভেঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করে। তারপর শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনা ও শামীম ওসমানের পোস্টার ছবিতে আগুন জ্বালিয়ে বিজয় উল্লাস করতে দেখা যায়। উৎসব মূখর পরিবেশের মধ্যে দিয়ে কোটা আন্দোলনে নিহত শহীদদের শ্রদ্ধা জানায়। এছাড়া কলেজ শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করেছে। অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানান বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফারহানা মানিক মুনা বলেন, নারায়ণগঞ্জে আমরা আজ ছাত্ররা মিছিল করেছি। আমরা নারায়ণগঞ্জের মানুষদের জানান দিতে চাই,আমরা এখনো রাজপথে আছি। আমরা সকল বৈষম্য’র বিপরিতে এসে নারায়ণগঞ্জকে সকলের জাতি ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য বাসযোগ্য উপযোগী একটি নারায়ণগঞ্জ গড়ে তোলার জন্য আমরা ছাত্র জনতা মরণপণ লড়াই করেছি এবং সেই লড়াইয়ে আমরা জয়ী হয়েছি। আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি আমরা একটা বৈষম্য বিরোধী অসাম্প্রদায়িক বাসযোগ্য নারায়ণগঞ্জ গড়ে তুলবো। আমাদের নতুন বাংলাদেশের লড়াই আমরা আজকে তোলারাম কলেজ থেকে শুরু করেছি। আজকে তোলারাম কলেজে আমরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা অবস্থান নিয়েছি। আজ তোলারাম কলেজে দাঁড়িয়ে আমরা ঘোষণা করছি, এখন থেকে তোলারাম কলেজ হবে স্বাধীন তোলারাম কলেজ। যে তোলারাম কলেজে সন্ত্রাস, লুটপাটকারী ও কোন দখলদারদের জায়গা হবে না। তোলারাম কলেজ হবে সাধারণ ছাত্রদের-বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সকলের সম্মিলিত তোলারাম কলেজ। তোলারাম কলেজে আমাদের নারায়ণগঞ্জের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা, চিন্তার বিকাশ, মনোনয়ন বিকাশের জন্য কাজ করবো। কোন দলীয় পান্ডা বাহীনি তোলারাম কলেজে আর কোনদিন গড়বে না। তোলারাম কলেজ এখন কাজ করবে নারায়ণগঞ্জের শিক্ষার।

শিক্ষার্থীদের উল্লাসে একত্বতা প্রকাশ করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে সরকারি তোলারাম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক বিমল চন্দ্র দাস বলেন, গত ১৫ বছরে এমন অনেক আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা যেটা করেছে, এটা অকল্পনীয় ম্যাজিকের মতো। তবে এই অর্জনটা তোমাদের ধরে রাখতে হবে। কিছু লোক আছে সুযোগ সন্ধানী, তারা কোন দল করে না, তারা আন্দোলনেও ছিলো না। তোমরা প্রতি এলাকায় কমিটি গঠন করবা। আর এই লুটপাট লোকাল মানুষজন করছে না। এখানে বাহির থেকে এসে এই লুটতরাজ চালাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে এই ধরণের কাহিনি যাতে না ঘটে।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন তোলারাম কলেজ কর্তৃপক্ষ আন্দোলনে অংশগ্রহন করেনি। তাদের সেই কথায় অধ্যাপক বিমল চন্দ্র দাস বলেন, সকাল থেকে আমরা এই প্রশ্নের উত্তর দিয়ে যাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যে স্বাধীনতা ভোগ করে আমরা সেটা পারি না। কিন্তু আমরা আমাদের পেইজের মাধ্যমে আমরা ছাত্রদের পক্ষে প্রতিবাদ জানিয়েছি। আমাদের সন্তানরা তোমাদের সাথে ছিলো। এটা কখনো মনে করো না যে, আমরা তোমাদের সাথে ছিলাম না। আমাদের অনেক টিচার মাঠে নেমেছেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা একটা দমবদ্ধ পরিবেশের মধ্যে ছিলাম। আমরা অনেক কিছু মেনে নেইনি, কিন্তু আমাদের মানতে বাধ্য হয়েছে। আমাদের কলেজের ছেলেদের বিভিন্ন হল থেকে খুঁজে বের করে হুমকি দিতো, রক্তাক্ত করতো। সেখানে আমি প্রতিবাদ করেছি। এখানে পরীক্ষা দিতে আসা ছেলেদের খুঁজে বের করতো যে, সে কোন দল করে। আমার অজান্তে এক ছাত্রকে স্টেপ (ছুড়িকাঘাত) করেছে, আমি নিজে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছি। এই ঘটনায় আমার টিচাররা সাক্ষি আছে। এই না যে আমরা মেনে নিয়েছি। আমরা মূলত মানতে বাধ্য হয়েছি। তোমাদের আন্দোলন ছিলো আমাদের আন্দোলন, আমরা নামতে পারিনি এটা আমাদের ব্যর্থতা ছিলো। পুরোন কিছু যাতে না ফিরে আসে এটা তোমরা ধরে রাখো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version