বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া নারায়ণগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য দিল্লির নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার দরগাহে দোয়া পড়িয়েছেন শেখে হাসিনাকে দেশে ফিরে যাওয়ার ভাগ্যের জন্য। ৫ সেপ্টেম্বর কে দিল্লির নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার দরগাহে দেখে ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার ও নির্মাতা মনিরুল হক একটি ছবি ও তথ্যদেন গণমাধ্যম গুলোতে। সেই তথ্যের মাধ্যমেই নিশ্চিত হওয়া যায় শামীম ওসমান দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন।
মনিরুল হক সিকিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়ে বাংলাদেশে ফেরার আগে ভারতের বিভিন্ন জায়গা ঘোরেন। তিনি ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নিজাম উদ্দিনের দরগাহে বসেছিলেন। এ সময় হঠাৎ তাঁর কানে ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি আসে। খেয়াল করে দেখেন এক ব্যক্তি বাংলাদেশের নাম উচ্চারণ করে দোয়া করছেন। তখন সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলের ক্যামেরা চালু করে ভিডিও করা শুরু করেন তিনি। মনিরুল সেই ভিডিও প্রথম আলোকে দিয়েছেন। প্রথম আলো অনলাইনে তার ভিত্তিতে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়- ভিডিওর উর্দু ভাষার সেই দোয়া বাংলা করলে হয়, ‘শামীম ওসমান সাহেবকে সালাম পৌঁছানোর সামর্থ্য দাও। শেখ হাসিনা সাহেবাকে শানদার সাফল্য দান করে বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার ভাগ্য দান করো।’
মনিরুল শামীম ওসমানকে দেখে বেশ অবাক হয়ে যান। শামীম ওসমানের সঙ্গে তাঁর পরিবারের সম্ভবত আরও তিনজন সদস্য ছিলেন। তিনি শামীম ওসমানকে অনুসরণ করতে থাকেন। দরগাহের এক পাশে থাকা খাবার জায়গায় শামীম ওসমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের তবারক বিতরণ করতে দেখেন তিনি। এমনকি যিনি দোয়া পড়ছিলেন, তাঁকে টাকাও দিতে দেখেন।
মনিরুলের দাবি, শামীম ওসমানের সঙ্গে তাঁর একবার চোখাচোখি হয়। তবে কোনো বাক্যবিনিময় হয়নি। শামীম ওসমানকে দেখে হতাশ মনে হয়েছিল বলেও জানান বাংলাদেশি এই শিক্ষার্থী।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর শামীম ওসমান ও তাঁর সহযোগীদের গুলি ছোড়ার অভিযোগ রয়েছে। এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ১৯ জুলাই বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া বঙ্গবন্ধু সড়কে শামীম ওসমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা–কর্মীরা মিছিল বের করেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, শামীম ওসমানসহ তার কয়েকশ অনুসারী আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে শহরের চাষাঢ়া এলাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সড়কের ২ নম্বর রেলগেইট এলাকার দিকে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া দিচ্ছেন। তাঁর সঙ্গীদের কয়েকজন আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ছোড়েন। ইতিমধ্যে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা হয়েছে।