বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষিত প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের এক দফা দাবিতে সকাল থেকে নারায়ণগঞ্জের রাজপথ দখলে নেয় আন্দোলনকারীরা। হামলা চালানো হয় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়েসহ বিভিন্ন প্রতিাষ্ঠানে। বভিন্নস্থানে সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক গুলিবিদ্ধসহ আহত হয় অন্তত দুই শতাধিক।
সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে নগরের প্রধান বঙ্গবন্ধু সড়কের ২ নং রেলগেইট ডিআইটি ও চাষাঢ়ায় অবস্থান নেয় আন্দোলন কারীরা। সড়কজুড়ে চলতে থাকে বিক্ষোভ মিছিল। এরমধ্যেই ভাঙচুর করা হয়েছে চাষাঢ়ায় রাইফেলস্ ক্লাব, পুলিশ বক্স৷ রাইফেলস্ ক্লাবের ভেতরে আগুন দেওয়া হলেও তা ছড়ায়নি৷ শহর ও শহরতলীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ৷ বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বালিয়ে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে৷ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রুটের শিবু মার্কেট,কায়েমপুর ও জালকুড়িসহ বিভিন্নস্থানে আন্দোলন কারীরা গার্মেন্টসসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে ইটপাটকেল নিক্ষেপ সহ ভাংচুর করে। তবে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যানবাহনকে সড়কে চলাচল করতে দিচ্ছে আন্দোলনকারীরা৷
ফতুল্লার শিবুমার্কেট এলাকায় কয়েকটি পোশাক কারখানায় আগুন দেওয়া হলে বিসিকসহ সকল কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে বলে জানান বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম৷
প্রত্যক্ষদর্শি কয়েকজন জানান, বেলা বারোটার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হামলা চালায় আন্দোলন কারীরা। কার্যালয়ের সামনে ডিসি থিম পার্কে আগুন দেয় তারা৷ পরে তারা কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে গেলে জেলা প্রশাসকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন ৷ বেলা তিনটার দিকে পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবারবুলেট নিক্ষেপ করে। আন্দোলন কারীরাও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক জানান,পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ টিয়ারসেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়েছে৷ এছাড়া কার্যালয়ের সামনে বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে৷ সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেরও বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের অবস্থানের কারণে দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ মহাসড়কটিতে সকাল সাড়ে দশটা থেকে যান চলাচল বন্ধ থাকে৷ প্ররত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীরা সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মদনপুর বাসস্ট্যান্ড ফুটওভার ব্রিজের নিচে অবস্থান নেয়। দুপুর ১২ টার দিকে কয়েক হাজার লোক একটি মিছিল নিয়ে মহাসড়কের কেওঢালা বেঙ্গল বিস্কুট ফ্যাক্টরীর সামনে পৌঁছায়। এ সময় বন্দর উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি ও মদনপুর ইউপি চেয়ারম্যান এমএ সালামের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা তাদের প্রতিহত করতে চাইলে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। শুরু হয় দফায় দফায় সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও টপাটকেল নিক্ষেপ। প্রায় তিন ঘণ্টা সংঘর্ষে মদনপুর কেওঢালা এলাকায় রণক্ষেত্র পরিণত হয়েছে। পরে পুলিশ টয়ার সেল ও রাবারবুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।এ ঘটনাশ দুইজন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে বল দাবি করেছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।
নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা হাসপাতালের তত্বাবধয়ক ডাক্তার মোঃ আবুল বাসার জানান,দুপুরের পর থেকে ১৪৩ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছ। এদের মধ্যে অর্ধশতাধিক ছড়া গুলিবিদ্ধ ছিল। ##