Sunday, November 24, 2024
Homeপ্রধান খবরশেখ হাসিনার দেশ ত্যাগ; বর্তমান অবস্থান ভারতে; দেখা করলেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা...

শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগ; বর্তমান অবস্থান ভারতে; দেখা করলেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল;

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত ও দেশত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। সোমবার দুপুরে সেনা ক্যান্টনম্যান্ট হয়ে পশ্চিমবঙ্গের উদ্দেশ্যে রওনা হয় এবং সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি পরিবহন বিমান দিল্লি-উত্তর প্রদেশ সীমান্তে গাজিয়াবাদের কাছে হিন্দন বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে। সেখানে অজিত দোভাল তাঁর সঙ্গে দেখা করেন।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, হাসিনা ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় চাননি। চেয়েছেন যুক্তরাজ্যের কাছে। তার বোন শেখ রেহানার যুক্তরাজ্যে বাড়ি থাকার সুবাদে এবং বাংলাদেশের সাবেক প্রধান্মন্ত্রী হওয়ায় তা গ্রাহ্য হলেই তিনি লন্ডনে রওনা হবেন। ততক্ষণ ভারত তাঁকে সাময়িক আশ্রয় দেবে বলে নিশ্চয়তা দিয়েছেন।

শেখ হাসিনা যে সময় দিল্লির অদূরে পৌঁছান, প্রায় সেই সময়েই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি, শেখ হাসিনার দেশত্যাগ, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের উদ্যোগ ও বাংলেদেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের নিরাপত্তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তিনি অবহিত করেন।

সরকারি সূত্র জানাচ্ছে, আগামীকাল মঙ্গলবার সংসদে জয়শঙ্কর বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতি দিতে পারেন। বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন কেন্দ্র করে এযাবৎ যত কিছু ঘটেছে, তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা সত্ত্বেও ভারত সরকারিভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। দুই সপ্তাহ আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে প্রশ্নের জবাবে শুধু বলা হয়েছিল, বাংলাদেশ যা চলছে, তা সে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এছাড়া এ বিষয়ে তিনি আর কোনো মন্তব্য করেননি।

সংগত কারণেই এই আন্দোলন ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারত মন্তব্য করতে অনাগ্রহী। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গভীরতা ও আন্দোলনের স্পর্শকাতরতার জন্য ভারত শুরু থেকেই সংযত থাকতে চেয়েছে। আন্দোলন চলাকালে ভারতবিরোধী স্লোগান উঠেছে। সামাজিক মাধ্যমে তীব্র ভারতবিরোধী মনোভাবের পরিচয়ও পাওয়া গেছে। তাই ভারত চায়নি এমন কোনো মন্তব্য করতে, যাতে হিতের বিপরীত হয়।

ভারতের সরকারি গোপন সূত্রে জানা যায়, বিরোধীরা দাবি তোলার আগেই সরকার নিজে থেকে বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে সংসদকে অবহিত করতে চেইয়েছিলো। বিশেষ করে বাংলাদেশে যেহেতু প্রচুর ভারতীয় নাগঋকের অস্থায়ী বসবাস এবং ব্যবস্যাইক সম্পর্ক বিদ্যমান।

শেখ হাসিনার দেশত্যাগ নিয়েও ভারত গোপনীয়তা রক্ষা করে চলেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও গণমাধ্যমে বেশ কিছু খবর প্রকাশিত হচ্ছে, যেগুলো অসমর্থিত। যেমন হেলিকপ্টারে চেপে ভারতে আসার পর শেখ হাসিনা বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর এক পণ্য পরিবহন বিমানে চাপেন। ভারতের আকাশে সেই বিমানকে পর্যবেক্ষণে রাখে ভারতীয় বিমানবাহিনী। সি-১৩০ সামরিক পরিবহন বিমানটি শেখ হাসিনাকে নিয়ে হিন্দন বিমানঘাঁটিতে নামে সোমবার সন্ধ্যায়।

শেখ হাসিনার পরবর্তী গন্তব্য লন্ডন। অন্তত গণমাধ্যমের দাবি তা-ই। কিন্তু কীভাবে তিনি সেখানে যাবেন, তা নিয়ে কোনো মহলে স্বচ্ছ ধারণা নেই। বিশেষ বিমান, নাকি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে, এ বিষয়ে কোনো স্পষ্ট তথ্য এখনো পাওয়া যাচ্ছে না। এ-ও জানা যায়নি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শেখ হাসিনার কথা হয়েছে কিংবা হবে কি’না।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির বিচারে সীমান্তে বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সব ধরনের রেল ও বিমান যোগাযোগ আজ সোম ও আগামীকাল মঙ্গলবারের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। ভারতের বেসরকারি বিমান সংস্থা ইন্ডিগো জানিয়েছে, পরিস্থিতির কারণে আগামীকাল মঙ্গলবারের সব ফ্লাইট বন্ধ রাখার ঘোষনা দেয়া হয়েছে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments