Homeআন্তর্জাতিক খবরকমলা ট্রম্পের বিতর্কে ভোটারদের মনে প্রভাব

কমলা ট্রম্পের বিতর্কে ভোটারদের মনে প্রভাব

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আছে আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ। যেসব ভোটার এখনো কাকে ভোট দেবেন সে সিদ্ধান্ত নেননি, তাঁদের মন জয় করার চেষ্টায় আছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার রাতে সরাসরি বিতর্কের মুখোমুখি হলেন দুই প্রার্থী।

৯০ মিনিটের ওই বিতর্ক দেখেছেন এমন ছয়জন ভোটারের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি। এই ছয়জনের সবাই আগামী ৫ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন, তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা ভেনেসা পিয়ার্স (৩৩) বিতর্ক শুরুর আগে ট্রাম্পের দিকে ঝুঁকছিলেন। এখনো সেদিকেই তাঁর টান রয়েছে; কিন্তু বিতর্কে কমলার পারদর্শিতায় তিনি মুগ্ধ।

ভেনেসা পিয়ার্স আরও বলেন, ‘এই বিতর্ক ট্রাম্পকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে আমার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারেনি; কিন্তু নির্বাচনে কমলা জিতলেও আমি এতটা ভয় পাব না। কারণ, আমি মনে করি তিনি নিজেকে ভালোভাবে সামলাতে পারেন। ভালো বিতর্ক করতে পারেন। তারপরও সার্বিকভাবে আমার অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি; কিন্তু এখন আমি তাঁকে (কমলা) আগের চেয়ে বেশি পছন্দ করি।’

৩৩ বছর বয়সী এই ভোটার বলেন, ‘আমি ডেমোক্রেটিক পার্টির ওপর ব্যাপকভাবে আস্থা হারিয়েছি, যখন তারা বলল যে জো বাইডেন ঠিক আছেন। পরে তারা তাঁকে বাদ দিল। তাই একই প্রশাসনের ওপর আস্থা রাখাটা কঠিন।’ তিনি বলেন, ‘আমি ট্রাম্পকে ভোট দিতে চাই না; কিন্তু বর্তমান প্রশাসনকেও পছন্দ করি না। নভেম্বরের আগে আমি আমার অবস্থান পরিবর্তন করব না।’

ওহাইও অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা ৩১ বছর বয়সী উইলিয়াম হোয়েকজেমা বলেন, বিতর্কে প্রায় সব বিষয় নিয়েই ট্রাম্প কথা বলেছেন; কিন্তু এ বিতর্কের পর আমি কমলার দিকে ঝুঁকব। ট্রাম্পকে নানা প্রশ্নের মাধ্যমে প্রলুব্ধ করা হয়েছিল। অভিবাসন ও গর্ভপাতের মতো বিষয়গুলোতে তাঁর যথাযথ উত্তর দেওয়া দরকার ছিল।

পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ২৯ বছর বয়সী বাসিন্দা রোহান বিজায়ন মনে করেন, এই বিতর্ক ছিল কমলার জন্য পরীক্ষার মতো। কাকে ভোট দেবেন, তা নিয়ে তিনি এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। বিতর্কের পর কমলার দিকে তাঁর সমর্থন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫১ শতাংশ, ট্রাম্পের দিকে তা ৪৯ শতাংশ।

সাউথ ক্যারোলাইনার বাসিন্দা ট্রেসি মারডক বিতর্ক দেখার পরও কাকে ভোট দেবেন, তা স্থির করতে পারেননি। তাঁর মতে, বিতর্কে দুই প্রার্থী খুব ভালোভাবে কথা বলেছেন। তবে কমলা ট্রাম্পের চেয়ে বেশি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। ৬৫ বছর বয়সী এই ভোটার বলেন, ‘আমি ট্রাম্পকে পছন্দ করি না। আমার মনে হয়, তিনি দেশ পরিচালনা করার পরিবর্তে দেশকে দখল করতে চান।’

উটাহ অঙ্গরাজ্যের ২৬ বছর বয়সী জেরেমি পিটারসেন ট্রাম্পকে পছন্দ করেন না। অন্যদিকে তিনি ২০১৬ বা ২০২০ সালে ডেমোক্রেটিক পার্টিকেও ভোট দেননি; কিন্তু মঙ্গলবার রাতের বিতর্কের পর তিনি কমলাকে ভোট দেওয়ার কথা ভাবছেন। কারণ, ট্রাম্পের দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া নিয়ে তিনি অনেক বেশি শঙ্কিত। তবে কমলাকে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও তিনি তাঁকে এতটা ভালোবাসেন না।

মঙ্গলবার রাতের বিতর্কে দুই প্রার্থীর কেউ চ্যান্স ফিলিপসের মন জয় করতে পারেননি। তাই আরাকানস অঙ্গরাজ্যের ১৯ বছর বয়সী এই ভোটার আসন্ন নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন, তা এখনো চূড়ান্ত করতে পারেননি। তাঁর মতে, বিতর্কে কোনো বিষয়ই গভীরভাবে আলোচনা করা হয়নি। এ বিষয় তাঁকে হতাশ করেছে। তাঁর প্রত্যাশা, দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী পরবর্তী বিতর্কে পরস্পরকে ব্যক্তিগত বিষয়ে আক্রমণ করার পরিবর্তে নিজেদের নীতিমালা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version