মঙ্গলবার রাতে সাবেক দুই আইজিপি শহীদুল হক এবং চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তারের খবর দেয় পুলিশ। দুজনকে ছাত্র আন্দোলনের সময় আলাদা দুটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার সাতসকালে আদালতে তোলা হয়। শুনানি শেষে শহীদুল হককে সাত দিন এবং চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আট দিনের রিমান্ডে পাঠান ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আখতারুজ্জামান।
কারো নামে কখনো মিথ্যা মামলা করেননি বলে আদালতে দাবি করেছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক। সদ্য সাবেক আরেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন আদালতে রিমান্ড শুনানির সময় অবশ্য চুপচাপ ছিলেন। কোনো কথাই বলেননি তিনি।
আদালতে রিমান্ড শুনানির সময় শহীদুল হক নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। বলেন, আমি পুলিশ প্রধান থাকতে কোনো মিথ্যা মামলা দিয়ে কাউকে হয়রানি করিনি।
‘পুলিশকে জনগণের কাছে নিয়ে গেছি। আমি যতোদিন চাকরি করেছি, মানুষের সেবা করেছি। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার কোনোটাই সত্য নয়। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ,’ বলেন তিনি।
তবে রিমান্ড শুনানির সময় আদালতে কোনো কথা বলেননি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। আদালতের এজলাস কক্ষের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে আইনজীবীদের বক্তব্য শোনেন তিনি। এসময় পুলিশের হেলমেট পরিধেয় অবস্থায় তাকে দেখা যায়। তবে শুনানির এক পর্যায়ে হেলমেট খুলে ফেলেন তিনি।
গত ১৯ জুলাই ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় ৪৫ বছর বয়সী ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদের মৃত্যুর ঘটনায় আসামি করা হয়েছে শহীদুল হককে।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে গত ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরে মুদি দোকানদার আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায়। গত ১৩ আগস্ট আদালতে হওয়া এই হত্যা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ছয়জনকে নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে।
আদালতকে সাবেক আইজিপি শহীদুল হক বলেন, আমাকে রিমান্ডে চাওয়া হল কেনো, সেটাই তো বুঝতেছি না। আমি এ মামলা সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ, তাই আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করছি।
শুনানির এক পর্যায়ে তার আইনজীবী মোরশেদ হোসেন শাহীন আদালতকে বলেন, তিনি (শহীদুল হক) ২০১৮ সালে পুলিশের চাকরি থেকে অবসরে যান। এরপর সরকারি আর কোনো লাভজনক পদে থাকেননি। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের অভাবনীয় উন্নয়ন সাধন করেন এবং জনগণের ভরসার জায়গায় নিয়ে গেছেন।
শহীদুল হককে সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে উল্লেখ করে আইনজীবী বলেন, তিনি একজন বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষ। এসময় তিনি শহীদুল হকের রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। এরপর আদালত শহীদুল হকের বক্তব্য শোনেন।
এদিকে হাজারীবাগ থানার একটি অপহরণ মামলায় গ্রেপ্তার ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সুপার নিউমারারি পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) আব্দুল্লাহিল কাফিকে আট দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।