Sunday, November 24, 2024
Homeরাজনীতিজামায়াতে ইসলামী-শিবির নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন বাতিল

জামায়াতে ইসলামী-শিবির নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন বাতিল

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল তা আজ বুধবার (২৮ আগস্ট) প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি আদেশক্রমে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মো. আব্দুল মোমেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যেহেতু বাংলাদেশ জামাতে ইসলামি এবং এর ছাত্র সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবির সহ এর সকল অঙ্গ সংগঠনের সন্ত্রাস ও সহিংসতায়ে সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায় নাই এবং যেহেতু সরকার বিশ্বাস করে যে,বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামী এবং উহার ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত নয়।

আরও বলা হয়েছে, সরকার, সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৮ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং এর ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ এর সব অঙ্গসংগঠনকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন বাতিল করেছে এবং উক্ত আইনের তফসিল-২ থেকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং এর ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ এর সব অঙ্গসংগঠনের তালিকাভুক্তি বাতিল করেছে। অবিলম্বে এটি কার্যকর হবে।

জামায়াতে ইসলামীর আইনজীবী শিশির মনির জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আজ যেহেতু সরকারি ছুটি, সেজন্য কাল (মঙ্গলবার) এ নিষিদ্ধের আদেশ প্রত্যাহার হচ্ছে বলে আশা রাখছি।

তিনি আরও বলেন, কেন জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হলো সেটা আমরা জানি না। মনে করছি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে দলটিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কারণ ফ্যাসিবাদি এই সরকারের বিরুদ্ধে দেশের ছাত্র-জনতা আন্দোলন করেছে। যেখানে জামায়াতে ইসলামীও সহযোগী শক্তি হিসেবে ভূমিকা রেখেছে। ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ক্ষেত্রে দলটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

গত ১ আগস্ট সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী, ছাত্রশিবির ও সংশ্লিষ্ট সব অঙ্গসংগঠন নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সেই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, যেহেতু, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রদত্ত কয়েকটি মামলার রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী (পূর্বনাম জামায়াত-ই-ইসলামী/জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ) এবং উহার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে (পূর্বনাম ইসলামী ছাত্রসংঘ) ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে সংঘটিত গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে দায়ী হিসাবে গণ্য করা হইয়াছে; এবং যেহেতু, বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে রাজনৈতিক দল হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বাতিল করিয়া দিয়াছে এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট বিভাগের উক্ত রায়কে বহাল রাখিয়াছে।

যেহেতু, সরকারের নিকট যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ রহিয়াছে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং উহার অঙ্গ সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সাম্প্রতিককালে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞ, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে সরাসরি এবং উসকানির মাধ্যমে জড়িত ছিল; এবং যেহেতু, সরকার বিশ্বাস করে যে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠন সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সহিত জড়িত রহিয়াছে;

সেহেতু, সরকার, সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা ১৮(১) এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠনকে রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হিসাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করিল এবং উক্ত আইনের তফসিল-২ এ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ উহার সকল অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসাবে তালিকাভুক্ত করিল। এই প্রজ্ঞাপন অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments