Homeনারায়ণগঞ্জএখনো স্বৈরাচাররা ষড়যন্ত্র করছে তা প্রতিহত করতে হবে-মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন

এখনো স্বৈরাচাররা ষড়যন্ত্র করছে তা প্রতিহত করতে হবে-মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সমস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেছেন, এই বিজয় নিয়ে এখনই খুশি হওয়া যাবে না। এখনো স্বৈরাচাররা ষড়যন্ত্র করছে। কিভাবে তারা আমাদের এই বিজয়কে নস্যাৎ করতে পারে। কিভাবে তারা দেশে আবারও অরাজকতা সৃষ্টি করে দেশে ফিরে আসতে পারে। আমাদের নেতা তারেক রহমান খুবই বিচক্ষণ। তিনি তাদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে আমাদের নেতাকর্মীদেরকে রাজপথে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আমাদেরকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাজপথে থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের দোসর ষড়যন্ত্রকারীদের ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে হবে। তাদেরকে আর ছাড় দেওয়া যাবে না।

গিয়াস উদ্দিন বলেন,এই স্বৈরাচারী সরকার কিন্তু এমনিতেই স্বৈরাচার হয়নি। তাদের দলের নেতা কর্মী সহ প্রশাসন থেকে শুরু করে সাংবাদিক, ব্যবসায়ী তাদের স্বার্থ নিয়ে সহযোগিতা করে তাদেরকে স্বৈরাচারি বানিয়েছে। আমরা তাদেরকে জানি এবং তাদেরকে চিনি এখন অন্তবর্তীকালীন সরকার রয়েছে আমরা বলবো তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন করে আর যাতে ষড়যন্ত্র করতে না পারে তার জন্য অন্তবর্তী কালীন সরকারকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়ে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারসহ তার দোসরদের বিচার দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত দুইদিনের অবস্থান কর্মসূচির প্রথম দিন বুধবার সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাং রোডস্থ ডাচ বাংলা ব্যাংকের সামনে জেলা বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, বিগত ১৬ বছরে এই স্বৈরাচারী সরকারের আমলে খুন, গুন ও নির্যাতনসহ এতটাই মিথ্যা মামলায় আসামি হয়েছি যে আমাদের অস্তিত্ব বিলীন হওয়ার মতো উপায় হয়েছিল। কিন্তু আমরা এই স্বৈরাচারী সরকারের কোন রক্ত চক্ষুকে ভয় করি নাই। আমরা রাজপথে থেকেই তা মোকাবেলা করেছি। আন্দোলনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা রাজপথে ছিলাম। আমাদের উপরে নির্বিচারে গুলি করা হয়েছে। আগুন সন্ত্রাস ও লুটপাট যারা করেছে তারা স্বৈরাচারীর লোকেরাই করেছে আমাদের কোন নেতাকর্মীরা সেখানে অংশগ্রহণ করে নাই । ৩ তারিখ ৪ তারিখ পুলিশকে দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
তিনি বলেন এই স্বৈরাচারী সরকারের মতো এমন পতন ইতিহাসে কখনো ঘটে নাই। স্বৈরাচারী সরকারের শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে। তিনি তার দলের নেতাকর্মীদের কথা কিন্তু চিন্তা করে নাই শুধু তার বোনকে নিয়ে পালিয়ে গেলেন। এই পতনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ নতুন করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। সবাই নতুন করে মুক্তির পথ দেখেছে।

 

তিনি বলেন, এই নারায়ণগঞ্জে ছিলো সর্বশ্রেষ্ঠ সন্ত্রাসী। এই সন্ত্রাসী বাহিনী এমন কোন অপকর্ম নেই যে তারা করেনি। এই অঞ্চলের সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান দখল করে তারা তাদের নিজের স্বার্থে ব্যাবহার করেছে। বিভিন্ন কায়দায় তারা অর্থ সম্পদ লুট করেছে। মাদক কারবারকে প্রসারিত করেও তারা অর্থ কামিয়েছে। এই সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে ব্যাবসায়ীসহ সকল স্থরের মানুষ ছিলো শোষিত। তাদের ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পায় নাই।
নারায়ণগঞ্জের কুখ্যাত সন্ত্রাসী শামীম ওসমান তার সন্তান ও ভাতিজাদের নিয়ে সেদিন ছাত্র-জনতা ও বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর গুলি চালিয়েছিলেন। কোথায় কোথায় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করেছে অগ্নিসংযোগ করেছে এর সকল ভিডিও আমাদের কাছে আছে। তার নেতৃত্বে এবং তার নির্দেশে এগুলা হয়েছিল। এই সন্ত্রাসীদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। তারা আজ বোরকা পড়ে পালিয়েছে। আমি আগেও বলেছি এখনও বলছি যতদিন পর্যন্ত এদের শেষ করতে না পারবো ততদিন পর্যন্ত আমি আপনাদের পাশে আছি। এরা কাপুরষ এদেরকে কেউ ভয় করবেন না।
গিয়াস উদ্দিন বলেন, আমাদের ছাত্র ছাত্রীরা দীর্ঘ সময় আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নিজের রক্ত বিলিয়ে দিয়ে এই দেশবাসীকে নতুন স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই যাদের নিহত হয়েছেন তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আহতদের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।
আগামী ১৬ আগস্ট দলনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনাসহ এই আন্দোনে যারা আহত হয়েছে তাদের সুস্থতা কামনা ও আন্দোলনে যাদের প্রাণ গেছে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনায় বাদ আছর জেলার সর্বত্র মসজিদে মসজিদে দোয়া আয়োজনের কর্মসূচি ঘোষনা দেন তিনি।

এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিকে সফল করতে সকাল থেকেই জেলা বিএনপির আওতাধীন থানা, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল শ্লোগানে শ্লোগানে শেখ হাসিনার বিচারের দাবিতে মিছিল নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।

কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি’র সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন, সহ- সভাপতি এস এম আসলাম, আড়াইহাজার উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ইউসুফ আলী ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহম্মেদ, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহিদুল ইসলাম টিটু, সাধারণ সম্পাদক এড. আঃ বারী ভূঁইয়া, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার, রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র এড. মাহফুজুর রহমান হুমায়ূন, সাধারণ সম্পাদক বাছির উদ্দিন বাচ্চু, সোনারগাঁও পৌরসভা বিএনপি`র সভাপতি শাহ্ জালাল মিয়া, সাধারণ সম্পাদক মোতালেব মিয়া, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সাদেকুর রহমান সাদেক, সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক খায়রুল ইসলাম সজিব, জেলা যুবদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুর রহমান স্বপন, মহানগর শ্রমিকদলের আহ্বায়ক এস এম আসলাম, জেলা কৃষক দলের সভাপতি ডা. শাহিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক কায়সার রিফাত, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ হাসান, জেলা তাঁতী দলের সভাপতি এড. শুক্কুর মাহমুদ,জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি আনোয়ার সাদাত সায়েম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান, সদস্য সচিব সালাউদ্দিন সালু, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধান, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি মন্টু মেম্বার, সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমানসহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version