গণআন্দোলনের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীত্ব থেকে পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর নিরবতা ভাঙলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তার ছেলে ও সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে মঙ্গলবার রাতে পোস্ট করা এক বিবৃতিত শেখ হাসিনা ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন। প্রথম দেয়া এ বিবৃতিতে ১৫ই অগাস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করার জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানানো সহ ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোয় দেশবাসীর কাছে বিচার চেয়েছেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট ধানমণ্ডি বঙ্গবন্ধু ভবনে যে নারকীয় হত্যার ঘটনা ঘটেছিল সেই স্মৃতি বহনকারী বাড়িটি আমরা দুই বোন বাংলার মানুষকে উৎসর্গ করেছিলাম। গড়ে তোলা হয়েছিলো স্মৃতি জাদুঘর। দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দেশ বিদেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এই বাড়িতে এসেছেন। স্বাধীনতার স্মৃতিবহনকারী এই জাদুঘরটি।
‘অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে স্মৃতিটুকু বুকে ধারণ করে আপনজন হারাবার সকল ব্যথা বেদনা বুকে চেপে রেখে বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার লক্ষ্য নিয়ে প্রিয় দেশবাসী আপনাদের সেবা করে যাচ্ছি। তার শুভ ফল ও আপনারা পেতে শুরু করেছেন। বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে । আজ তা ধুলিসাৎ হয়ে গেছে। আর যে স্মৃতিটুকু আমাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন ছিল তা পুড়িয়ে ছাই করে দেয়া হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘চরম অবমাননা করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি, যার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা পেয়েছি আত্মপরিচয় পেয়েছি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। লাখো শহীদের রক্তের প্রতি অবমাননা করেছে । আমি দেশবাসীর কাছে এর বিচার চাই।’
তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে আবেদন জানাই যথাযথ মর্যাদার সাথে ভাব গম্ভীর পরিবেশে জাতীয় শোক দিবস ১৫ই আগস্ট পালন করুন। বঙ্গবন্ধু ভবনে পুষ্প মাল্য অর্পণ ও দোয়া মোনাজাত করে সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
শেখ হাসিনা বলেন, গত জুলাই মাস থেকে আন্দোলনের নামে যে নাশকতা, অগ্নিসন্ত্রাস ও সহিংসতার কারণে অনেকগুলি তাজা প্রাণ ঝরে যাচ্ছে। ছাত্র, শিক্ষক, পুলিশ এমন কি অন্তঃসত্তা নারী, পুলিশ, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক সেবী, কর্মজীবী মানুষ, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী , পথচারী এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত যারা সন্ত্রাসী আগ্রাসনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন, তাঁদের প্রতি শোক জ্ঞাপন করছি এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। স্বজনহারা বেদনা নিয়ে আমার মত যারা বেঁচে আছেন তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাই।
আওয়ামী লীগের সভাপতি আরও বলেন, ‘আমি এই হত্যাকাণ্ড ও নাশকতার সাথে জড়িতদের যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবি জানাচ্ছি।’
সজীব ওয়াজেদ জয়:
এর আগে ১১ আগষ্ট জয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জয় নিজেও ১৫ আগস্ট, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের প্রতি শান্তিপূর্ণভাবে শ্রদ্ধা জানাতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন জাতির পিতার স্মৃতিকে বাংলাদেশ থেকে মুছে ফেলার যে ষড়যন্ত্র চলছে, আপনার-আমার-সবার শ্রদ্ধা নিবেদনই হোক তার প্রতিবাদ।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু।।