গণ-অভ্যুত্থান আমাদের এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে

0
147

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন পরিচালক ও অভিনয়শিল্পীদের অনেকে। নিজেরা তো ছিলেনই, কেউ চারপাশের সবাইকে সংগঠিত করার চেষ্টাও করেছেন। তাঁদের মধ্যে দীপক সুমন এর সঙ্গে কথা বলেছে বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় গণমাধ্যম। তাঁর কাছ থেকে আন্দোলনের শিক্ষা ও অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রত্যাশার কথা জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে অবগত করেন।

দীপক সুমন: বাংলাদেশে ক্রিয়াশীল সব পন্থার সব রাজনৈতিক দলকেই আমার ব্যর্থ মনে হয়। যদিও ফ্যাসিজমের কাজই হচ্ছে সব মত, পথ, দলের বিকাশের পথ রুদ্ধ করে দেওয়া। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ঠিক এই কাজটিই করেছে ১৫–১৬ বছর ধরে। কাজেই আমার এই লড়াই ফ্যাসিস্ট সরকার ও তার স্বৈরাচারী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে, গণহত্যার বিরুদ্ধে।

আওয়ামী লীগের মতো বৃহদাকার দল বা কাছাকাছি শক্তির রাজনৈতিক দল এ দেশে শুধুই বিএনপি। অন্য অনেকেই এই দুই দলের উচ্ছিষ্টভোগী আর কেউ কেউ নিষ্ক্রিয় রুটিন কাজ চালিয়ে যাওয়া দল। এদের মধ্যে বিএনপির মনে হয় সবচেয়ে বেশি শেখার আছে আওয়ামী লীগের এমন পরিণতি দেখে। আমার তো মনে হয়, আগামীর বাংলাদেশে যারাই দেশ পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে, সবারই শিক্ষা নেওয়ার আছে। শিক্ষা নিতে হবে, ছাত্র-জনতা চুপ করে থাকা মানেই সব মেনে নেওয়া নয়। কখনোই নিজেকে এত বড় রাক্ষস ভাবা উচিত নয় যে সব হজম করে ফেলা যাবে।

নতুন সরকার ন্যায়বিচার ও সব নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করুক, যেটা এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য। সেই সঙ্গে দেশকে দ্রুত স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে গিয়ে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করুক।

আমরা আন্দোলন চলাকালে যখন একসঙ্গে গান গেয়েছি, কবিতা পড়েছি, রাস্তায় আর দেয়ালে দেয়ালে গ্রাফিতি এঁকেছি, তখনই বুঝতে পেরেছি, আমাদের মধ্যে বিভাজনের রেখা খুব সামান্য। সেটা ইতিমিধ্যেই ঘুচে গেছে। গণ–অভ্যুত্থান আমাদের এক নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে, যেখানে মসজিদের মাইক থেকে ভিন্ন সম্প্রদায়ের উপাসনালয় ও ঘরবাড়ি-সম্পদ রক্ষার এলান দেওয়া হয়। একই বৃন্তে দুটি কুসুম নয়, অনেক কুসুমের সমাহার হয়েছে। আমাদের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি নিঃসন্দেহে সারা পৃথিবীতে নতুন করে আলোর দিশা দেবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here