ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে একটি পক্ষের সশস্ত্র হামলায় অন্তত ছয় জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। রোববার (১১ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধরা হলেন, শফিউল্লাহ, আবদুল্লাহ আল মামুন, আব্দুর রহমান, বাকিবিল্লাহ। অন্য দুই জনের নামপরিচয় জানা যায়নি। আহতরা সবাই বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, দীর্ঘদিন দখলে থাকা এস আলম গ্রুপের ভাড়াটে লোকজন এ গুলি করেছে। তারা গুলি করে পালিয়ে গেছেন। এখন ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন এস আলম বিরোধী আন্দোলনকারীরা। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরদিন এস আলমের নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের ব্যাংক থেকে বের করে দেয় বিক্ষুব্ধ ব্যাংকাররা। এরপর গত ৭ এবং ৮ আগস্ট ব্যাংকারদের বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক দখলের পর পদায়ন পাওয়া এক্সিকিউটিভসহ (নির্বাহী কর্মকর্তারা) যারা অবৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছেন তাদের নিয়োগ বাতিলের দাবি করেন। এমন অবস্থায় গত বুধবার এস আলমের আমলে পদোন্নতি পাওয়া অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) কায়সার আলী ব্যাংকে এলে তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামী ব্যাংকের এসএভিপি ড. শওকত আলী জানান, গতকাল জানতে পারি এস আলমের বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যাংকের যারা আছেন তারা একত্রিত হচ্ছেস। যারা ব্যাংকটিকে লুটপাট করেছে তারা চাইছে নিজেদের লোক ব্যাংকে রাখতে। এ তথ্য পেয়ে তারা যাতে ব্যাংকে ঢুকতে না পারে সেজন্য ব্যাংকের সামনে আমরা অবস্থান নেই। একটা পর্যায় এস আলমের লোকজন সিটি সেন্টারে অবস্থান নেয়। তারা মিছিল নিয়ে প্রধান কার্যালয়ে প্রবেশ করতে চায়। তখন ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তারা তাদের প্রতিহত করতে গেলে এস আলমের লোকজন গুলি চালায়। তাতে ছয়জন গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বৈষম্যবিরোধী ব্যাংকাররা সে সময় প্রতিরোধ করলে তারা পালিয়ে যায়।
কর্মকর্তারা ইসলামী ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদ পুনর্গঠনের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে লুটেরাদের বের করে দেওয়ার দাবি জানান। পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুল মাওলা, এডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর কাউসার আলী, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আকিজ উদ্দিন, মিফতাহ উদ্দিন সহ এস আলমের নিয়োগ করা কর্মকর্তাদের ব্যাংক থেকে বহিষ্কারের দাবি তাদের।
এর আগে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকালে ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বিক্ষোভ করেন সুবিধাবঞ্চিত কর্মকর্তারা। ওইদিন ব্যাংকটিতে এস আলমের নিয়োগ দেওয়া কর্মকর্তাদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি।