ভারতের বিহার রাজ্যে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রাচীন উৎসব ‘জিতিয়া’ বা ‘জীবিতপুত্রিকা’ পালনের সময় নদী এবং পুকুরে গোসল করতে গিয়ে অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৩৭ জন শিশু ও সাত নারী রয়েছেন। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে।
রাজ্য সরকারের বরাতে সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুস্থান টাইমস জানিয়েছে, মঙ্গল ও বুধবার বিহারের পূর্ব ও পশ্চিম চম্পারন, ঔরঙ্গাবাদ, কাইমুর, বক্সার, সিওয়ান, রোহতাস, সারান, পাটনা, বৈশালী, মুজাফফরপুর, সমষ্টিপুর, গোপালগঞ্জ এবং আরওয়াল জেলায় এসব ঘটনা ঘটেছে।
এরইমধ্যে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) এবং স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এসডিআরএফ) বেশ কয়েকটি দল অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে।
বিহারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের (ডিএমডি) একজন কর্মকর্তা জানান, সাম্প্রতিক বন্যায় বিহারের বিভিন্ন নদী ও পুকুরে পানি বৃদ্ধি পায়। এসব জলাশয়ে ধর্মীয় উৎসবের অংশ হিসেবে গোসল করতে নেমেছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। তখন আলাদা আলাদা স্থানে ৪৬ জন পানিতে ডুবে মারা যান।
ওই কর্মকর্তার দাবি, এই উৎসব উদযাপনের আগে লোকজনকে নদী ও পুকুরে পানির বিপজ্জনক স্তরের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিলো, কিন্তু তারা তা উপেক্ষা করেন। বিহার রাজ্যের ১৫টি জেলাজুড়ে এসব মানুষের ডুবে যাওয়ার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।
নিহতদের জন্য শোক প্রকাশের পাশাপাশি নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে চার লাখ রুপি করে সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার।
সন্তানদের মঙ্গল ও সমৃদ্ধি কামনায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী মায়েরা প্রতি বছর ‘জিতিয়া’ বা ‘জীবিতপুত্রিকা’ উৎসব পালন করেন। তিনদিনের এই উৎসব সাধারণত আশ্বিন মাসের কৃষ্ণপক্ষের সপ্তম থেকে নবম দিনের মধ্যে পালিত হয়।
এসময় সন্তানদের মঙ্গল কামনায় মায়েরা উপবাস করেন। পরে সন্তানদের নিয়ে বিভিন্ন নদী, পুকুর ও জলাশয়ে গোসল করতে যান মায়েরা।
সবশেষ গেলো জুলাই মাসে দেশটির উত্তরপ্রদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এক ধর্মীয় সমাবেশে পদদলনে অন্তত ১১৬ জন নিহত হন। যা ছিলো দেশটিতে গত এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।