পুলিশি রিমান্ডে সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল বলেছেন, ‘সব কিছুর জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্য দায়ী। আমি তাকে মাঝেমধ্যেই আইনগত বিভিন্ন বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতাম। কিন্তু তিনি এক কান দিয়ে শুনতেন, অন্য কান দিয়ে বের করে দিতেন। তিনি সব সময় ছিলেন নিজের সিদ্ধান্তে অটল।’
ছাত্ররা কোটা সংস্কার চেয়েছিল, কিন্তু ২০১৮ সালে এটি কেন বাতিল করা হয়েছিল? রিমান্ডে এমন প্রশ্ন করা হয় আনিসুল হককে। সাবেক মন্ত্রী বলেছেন, সবই হয়েছে শুধুমাত্র শেখ হাসিনার রাগ-একগুঁয়েমির কারণে।
আনিসুলকে রিমান্ডে রাখা দায়িত্বশীল একটি সূত্র গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। বেশ কয়কটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন আনিসুল হক। আদালতে তোলার পর তাকে রিমান্ডে পাঠান বিচারক।
জিজ্ঞাসাবাদে তদন্ত কর্মকর্তা আনিসুল হককে প্রশ্ন করেন, ২০১৮ সালে যখন কোটা সংস্কার আন্দোলন হয়, তখন ছাত্ররা সব কোটা বাতিল চায়নি। তারা সংস্কার চেয়েছে। কিন্তু আপনারা কোটা বাতিল করে দিলেন কেন? জবাবে আনিসুল বলেন, ‘এসব হয়েছে শুধু প্রধানমন্ত্রীর রাগ ও একগুঁয়েমির কারণে। ’
ডিবি কর্মকর্তার আবার প্রশ্ন করেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যেহেতু রাগ করে কোটা বাতিল করেছেন, তাই তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার শপথ ভঙ্গ করেছেন। এটা দেখিয়েই তো আপনি আইনমন্ত্রী হিসেবে পদত্যাগ করতে পারতেন? আনিসুল হক বলেন, ‘শেখ হাসিনার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না। আপনারা যেমন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ মানতে বাধ্য, আমরা তেমন শেখ হাসিনার আদেশ মানতে বাধ্য ছিলাম। ’
ডিবি কর্মকর্তা প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, ‘আপনারা যারা উপদেষ্টা, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ও নেতা ছিলেন তারা শেখ হাসিনাকে বোঝাতে পারেননি। আপনারা যদি সবাই শেখ হাসিনাকে সঠিক বার্তা দিতেন তাহলে তিনি নিশ্চয়ই বুঝতেন। তারপরও আপনাদের কথা না শুনলে আপনারা কয়েকজন পদত্যাগ করতেন। আনিসুল হক বলেন, ‘আপনারা জানেন না শেখ হাসিনা কত বড় একরোখা মানুষ। ’
তখন রিমান্ডকারী প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনারা নিজেদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেননি। নিজেদের বিবেকের কাছ কি দায় এড়াতে পারবেন? এ সময় তিনি না-সূচক জবাব দেন।
রাজধানীর নিউমার্কেট থানার একটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে গ্রেপ্তার হন আনিসুল হক। হত্যার ঘটনায় ইন্ধনদাতা হিসেবে তারা দুজন গ্রেপ্তার হন। এরপর আরও কয়েকটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলাগুলো আমলে নিয়ে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। এরপর থেকেই রিমান্ডে আছেন সাবেক এ আইনমন্ত্রী।
রিমান্ডে থাকা ডিবি কর্মকর্তাদের কাছে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন সাবেক আইনমন্ত্রী।
সূত্র:রেডিও টুডে।