ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গেলে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকীর প্রাইভেটকার ভাঙচুর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকালে এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘সকাল ৭টার দিকে ফুল দিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু দিতে পারিনি। দু-একজন সালাম দিয়ে ফিরে যেতে বলেছে—এটা খুবই ভালো লেগেছে। আমি গাড়ির ভেতরে থাকা অবস্থায় কয়েকজন ঢিল ছুড়েছে, লাঠি দিয়ে গাড়ি ভেঙেছে। তারপর আমি চলে এসেছি।’‘গত ১৫-১৬ বছর আওয়ামী লীগ গায়ের জোরে চলেছে, আর এখনও চর দখলের মতো চলছে’ বলে মনে করেন কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘এসব করলে জীবন দিয়ে ছাত্রদের আনা সফলতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
৩২ থেকে আটকদের উদ্ধার করলেন সেনা সদস্যরা:
ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ও আশপাশের সড়ক থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের হাতে আটক ৩০ জনকে উদ্ধার করেছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বেলা ১টার দিকে ৩২ নম্বরের উল্টোপাশে শুক্রাবাদ নিউ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ক্যাম্পাস থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের আগে বুধবার (১৪ আগস্ট) রাত থেকে ধানমন্ডি ও আশপাশে অবস্থান নেয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্ররা। বৃহস্পতিবার সকালে আওয়ামী লীগের কিছু কর্মী-সমর্থক ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের দিকে আসলে ছাত্রদের ধাওয়া তারা ফিরে যায়।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ৩২ নম্বর ও শুক্রাবাদ এলাকায় আওয়ামী লীগার সন্দেহে কয়েকজনকে মারধর করা হয়। এরপর তাদেরকে নিউ মডেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ক্যাম্পাসে আটক রাখা হয়। এ ছাড়া পথে পথে যারাই ভিডিও ধারণ ও ছবি তুলছিলেন তাদের মোবাইল চেক করা হয়। মোবাইলে বঙ্গবন্ধুর ছবি, আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট তথ্য পাওয়ায় আরও কয়েকজনকে আটক করতে দেখা যায়।
দেখা যায়, সন্দেহজনক ব্যক্তিদের মোবাইল চেক করছেন রাস্তায় থাকা শিক্ষার্থীরা। কেউ মোবাইল বের করলেই ছবি বা ভিডিও ধারণ না করার অনুরোধ জানানো হয়। এসময় কাউকে সন্দেহ হলে তাদের মোবাইল চেক করা হয়।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের সামনে মাইকে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবদুর রাজ্জাককে ঘোষণা দিতে শোনা যায়, ‘সকালে আওয়ামী লীগের দুষ্কৃতিকারীরা ৩২ নম্বরের সামনে এসে ঝামেলা করার চেষ্টা করেছিল, ছাত্র-জনতা তাদের প্রতিহত করেছে। এখন যাদের ধরবেন উপযুক্ত প্রমাণ না পেলে কিছুই করবেন না। দুষ্কৃতিকারীদের নিউ মডেল কলেজে আটকে রাখবেন।’
বৃহস্পতিবার সকাল আটটার পর থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ১০০ জনের বেশি লোককে আওয়ামী লীগ সন্দেহে মারধর করতে দেখা যায়। তারা কিল, ঘুষি ছাড়াও লাঠি, পানির পাইপ দিয়ে মারধর করে। নিউ মডেল কলেজের ভেতরে আটকে রাখাদের মধ্যে নারীও ছিল।
বেলা পৌনে একটার সময় সেনাবাহিনীর চারটি এবং বিজিবির একটি গাড়িতে এসে নিউ মডেল কলেজের সামনে থাকা শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেন সেনা ও বিজিবি সদস্যরা।
পরে কয়েকজন সেনা সদস্য কলেজের ভেতরে ঢুকে আটকে রাখাদের বের করে গাড়িতে তোলেন। এর মধ্যে একটি গাড়িতে ৯ জন নারী এবং ২টি গাড়িতে ২০ জনের বেশি পুরুষকে তোলেন। এরপর তাদের নিয়ে পান্থপথের দিকে চলে যায় গাড়িগুলো। এসময় ছাত্ররা সন্দেহভাজন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেন।