Sunday, November 24, 2024
Homeঅন্যান্য খবরযুক্তরাষ্ট্রে ইউনূসের সঙ্গে মঞ্চে ওঠা তিনজনের একজন অনুপ্রবেশকারী

যুক্তরাষ্ট্রে ইউনূসের সঙ্গে মঞ্চে ওঠা তিনজনের একজন অনুপ্রবেশকারী

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ‘ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অনুষ্ঠানে বক্তব্যের এক পর্যায়ে ড. ইউনূস সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারীদের মঞ্চে ডাকেন। এতে সাড়া দিয়ে মঞ্চে আসেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা তিথি ও অপর এক তরুণ। প্রথম দু’জনের ইউনূসের সফরসঙ্গীর তালিকায় থাকলেও, তৃতীয়জনের নাম ছিলো না। অনুষ্ঠানের মঞ্চে তৃতীয় তরুণকে ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম।এ নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে একাত্তর টিভি অনলাইন।
প্রতিবেদনে বলা হয়- অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রচারের পর তৃতীয় সেই তরুণের পরিচয় নিয়ে শুরু হয় চর্চা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলতে থাকে আলোচনা-সমালোচনা। নিউইয়র্কের ওই অনুষ্ঠানের মঞ্চে তৃতীয় তরুণের উপস্থিতি নিয়ে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্ট দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম। সেখানে তিনি ওই তরুণকে ‘অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
পোস্টে মাহফুজ আলম লেখেন, সিজিআইয়ের (ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ লিডারস স্টেজ) অনুষ্ঠানের ওই ব্যক্তি অনুপ্রবেশকারী এবং অসৎ লোক। তার অনুপ্রবেশ নাশকতার অংশ। ওই ব্যক্তি নিজস্ব ক্ষমতাবলে সিজিআই ইভেন্টে যোগ দিয়েছেন। আমরাসহ ডেলিগেটরা তার উপস্থিতি ও উদ্দেশ্য জানতাম না। এমনকি সে ডেলিগেটদের কারও সঙ্গে যোগাযোগও করেননি।
ড. ইউনূসের বিশেষ সহকারী আরও লেখেন, স্যার আমাদের মঞ্চে ডাকলে হুড়মুড় করে আমাদের আগে মঞ্চের দিকে তিনি দৌড়ে আসেন। আমি তাকে মঞ্চে যাওয়া থেকে প্রতিরোধ করতে পারিনি, যদিও আমি সন্দেহজনক ছিলাম। এছাড়া বিশ্বনেতা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে আমি অসহায় ছিলাম। এটি ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর অন্তর্ঘাতের একটি পূর্ব-পরিকল্পিত কাজ।


ইংরেজিতে লেখা ওই পোস্টে মাহফুজ আরও বলেন, আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের নেতারা, সমন্বয়কারী ও যোদ্ধাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমরা তার অনুপ্রবেশ রোধ করতে পারিনি। আমরা আগামীতে গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধিত্বের বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকব এবং অনুপ্রবেশকারীদের জবাবদিহির আওতায় নিয়ে আসবো।

মঞ্চে ওঠা তৃতীয় তরুণ কে?

‘ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ লিডারস স্টেজ’ অনুষ্ঠানে ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলমসহ তিন জনকে সরকার পতন আন্দোলনের ‘নেপথ্য কারিগর’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। কিন্তু পরিচয় করিয়ে দেয়া এই তিন জনের মধ্যে তৃতীয় তরুণের পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
প্রাথমিক অভিযোগ উঠে আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট থেকে। যেখানে বলা হয় আওয়ামী পরিবারের জাহিন রোহান রাজিন ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের সঙ্গে সমন্বয়ক পরিচয়ে বিল ক্লিনটনের প্রোগ্রামে আসেন। অথচ তিনি আন্দোলনেই ছিলেন না! সমন্বয়ক তো বহু পরের বিষয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই তরুণকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হিসেবে দাবি করেছেন। ফেসবুকে ছড়িয়ে যাওয়া একটি ছবিতে ওই তরুণকে দেখা গেছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের সঙ্গে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, তৃতীয় ওই তরুণ জাহিন রোহান রাজিন। হাইড্রোকো প্লাস এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের কেউ নন বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।
পরে বিভিন্ন সংবাদ ও গণমাধ্যমে জাহিন রোহানের বক্তব্যও এসেছে। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানে উপস্থিত দুই বিদেশির কাছ থেকে তাগাদা পেয়ে কিছু না বুঝেই মঞ্চে উঠে গেছেন।
ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, ওই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ আমি পেয়েছিলাম সিজিআই ফেলো হিসেবে। যখন ড. ইউনূস ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ডাকলেন তখন আমি দর্শকসারি থেকে করতালি দিচ্ছিলাম। আমার পাশে বসেছিলেন দুই বিদেশি ভদ্রলোক। তারা আমাকে বললেন যে, তুমি তো বাংলাদেশি তরুণ, তুমিও যাও। তাই আমিও কিছু না ভেবেই স্টেজে উঠে গেছি মাহফুজ ভাইদের পেছন পেছন।
তিনি আরও বলেন, আমি ২০২১ সালের ইউনূস অ্যান্ড ইয়ুথ ফেলো। আমার প্রতিষ্ঠান হাইড্রোকো প্লাসের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমি প্রফেসর ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে চাচ্ছিলাম। নিউইয়র্কে সিজিআইয়ের অনুষ্ঠানে ড. ইউনূস আসবেন শুনে আমি খুবই খুশি হয়েছিলাম যে তার কাছাকাছি যাওয়ার একটা সুযোগ হবে।
সাবেক মন্ত্রী তাজুলের সঙ্গে একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জাহিন বলেন, ২০২২ সালে ঢাকা ওয়াসার সঙ্গে একটা কাজ করে আমার প্রতিষ্ঠান হাইড্রোকো প্লাস। ওই কাজের জন্যই স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করতে হয়েছিল। সেসময় ছবিটি তোলা হয়। ছবিটা কীভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এলো, তা আমি জানি না।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় আমি দেশেই ছিলাম। আমি নিজেই ‘জেন-জি’। সুতরাং এই আন্দোলন সমর্থন না করার প্রশ্নই আসে না। সূত্র: একাত্তর।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments