জাগরণ ন্যাশনাল ডেস্ক: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদল ও তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিনের বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদিন। তিনি জানান, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদলের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বঙ্গভবন প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও এ কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন তিন বাহিনী প্রধান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষক এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৩ সমন্বয়ক। বঙ্গভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে নোবেলবিজয়ী ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব করা হয়। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাদের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত পোষণ করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশ এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। এ সংকট উত্তরণে দ্রুত সম্ভব অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা জরুরি। উপদেষ্টামণ্ডলীর অন্যান্য সদস্য মনোনয়নের ক্ষেত্রে তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করার পরামর্শ দেন। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে মনোনয়ন দেওয়ার পরামর্শ দেন। রাষ্ট্রপতি সংকট উত্তরণে দেশবাসীকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, বিমান বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজিমউদ্দিন খান এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৩ সমন্বয়ক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
উল্রেখ্য,এর আগে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা নিয়ে রাষ্ট্রপতি ও তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের বৈঠক হয়। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠক করতে বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৩ সদস্যের একটি দল। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় তিন বাহিনীর প্রধানেরা বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন। এর কিছুক্ষণ পর বঙ্গভবনে আসেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে আজাদ। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান।
রাত ১১টার দিকে বৈঠক শেষ করে বের হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা। সমন্বয়কেরা সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতে করে বঙ্গভবন থেকে বের হন। এ সময় গাড়িটির সামনে ও পেছনে সেনাবাহিনীর জিপ দেখা যায়। রাত ১১টায় সমন্বয়কেরা বের হলেও এই দুই শিক্ষক, তিন বাহিনীর প্রধান ও এ কে আজাদ তখনো বঙ্গভবনের ভেতরে অবস্থান করছিলেন।